জাতীয় মহিলা সংস্থা, পাবনা জেলা কার্যালয় এর উপস্থিত আজকের নির্বাহী অফিসার জনাব মো: রবিউল ইসলাম আশরাফী স্যার এর বিদায় সংবর্ধনায় সম্মানিত চেয়ারম্যন মহোদয়, শ্রদ্ধেয় স্যার জনাব মো: রবিউল ইসলাম আশরাফী ও আমার সকল সহকর্মী তথা সহযাত্রীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আজকে এখানে আমাদের উপস্থিতির কারণ আমরা সকলেই খুব ভালোভাবে জানি।
আজকে সত্যিই একটি বেদনার দিন, একটি মন খারাপের দিন।
আজ আমাদের প্রিয় শ্রদ্ধেয় মোঃ রবিউল ইসলাম আশরাফী স্যারের দীর্ঘ ৩০ বছরের কর্মজীবনের পরিসমাপ্তির দিন।
একটা বহতা নদীর জীবনে হঠাৎ ছন্দ পতনের দিন। একটি ভীষণ রকমের অনাকাঙ্ক্ষিত দিন।
বিদায় জিনিসটা বড় বেদনার, বিদায় বড় কষ্টের।
তাই অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে হয়, আজ মো: রবিউল ইসলাম আশরাফী স্যারের বিদায় অনুষ্ঠান। যদিও আমি মনে করি এটা একটা বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।
কারণ মন থেকে চিরতরে বিদায় দেওয়া কিংবা নেওয়া কখনোই সম্ভব নয়।
আমাদের মধ্য থেকে মো: রবিউল ইসলাম আশরাফী স্যারের বিদায় সত্যি আমাদের জন্য হৃদয়বিদারক।
তিনি আর পূর্বের ন্যায় আমাদের মাঝে আসবেন না ভাবতেই কেমন যেন লাগে।
কিন্তু এটা তো প্রত্যেক চাকুরিজীবির জীবনের স্বাভাবিক এবং অবিচ্ছেদ্য একটি ঘটনা।
সময় চলে যায় বয়ে যায় নদী আর কথা রয়ে যায় হৃদপিন্ডের পাতায় পাতায়। ভুলে যেতে চাইলেও অনেক স্মৃতি ভর করে মনের ক্যানভাসে, আপন হৃদপিন্ডের আয়নায়।
সুগন্ধি যেমন চোখে দেখা না গেলেও তার সৌরভ হৃদয় কে প্রফুল্ল করে। সুরের পাখি যেমন দূরে গেলেও তার রেশ ফুরোয় না, ঠিক তেমনি আপনার এই বিদায় বেলার স্মৃতি ভুলে যেতে চাইলেও ভোলা যায় না।
সৃষ্টির অমোঘ নিয়মে বিদায় শব্দের শাসন মেনে আপনাকে বিদায় জানাতে হচ্ছে আমাদের।
আটকে রাখার সাধ্য আমাদের কারোর নেই। আপনার বিদায় বেলা অশ্রুসিক্ত না করে শুধু বলবো
"তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম.."
তুমি রবে নীরবে কর্মচারীদের হৃদয়ের গোলাপী আঁধারে।
অফিসের প্রতিটি কোনায় আপনার স্পর্শ বিদ্যমান। অফিসের প্রতিটা অঙ্গনে আপনার সংস্পর্শ স্মৃতি হয়ে থাকবে। বিদায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শারীরিক বিদায় হলেও কোনভাবে আপনাকে এই অঙ্গণ থেকে কিংবা মন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা সম্ভব নয়।
একটি মোমবাতি যেমন নিজে পুড়ে অন্যের পথ প্রদর্শন করে ঠিক তেমনি আপনিও আপনার যোগ্যতা, সময় ও শ্রম দিয়ে কর্মচারীদের পথ দেখিয়েছেন, অত্যন্ত প্রিয় হয়ে উঠেছেন।
কর্মচারীদের প্রতি আপনার অনুশাসন, পরক্ষণেই তাদের প্রতি আপনার অপরিসীম ভালোবাসা, আপনার সময়ানুবর্তিতা, আপনার কর্মনিষ্ঠা আপনার চলাফেরা, সহকর্মীদের প্রতি সদাচরণ ও সৌহার্দ্য সত্যিই আমাদের মত তরুণদের জন্য একটা মাইলস্টোন।
আপনার সহকর্মী হয়েও আমরা আপনার নিকট থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি এটা আমাদের কাছে সৌভাগ্যের।
আপনার প্রতি কর্মচারীদের অপরিসীম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাই প্রমাণ করে, আপনি একজন সফল মানুষ।
তাই এরকম একজন মানুষকে কিভাবে বিদায় দিই। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি --
Every farewell is the beginning of a new life.
তাই বেদনার পাশাপাশি এটাও ভাবতে খুব আনন্দ বোধ হচ্ছে যে মো: রবিউল ইসলাম আশরাফী স্যার একটি নতুন জীবনে ফিরে যাচ্ছেন। নিজের পরিবার, বাড়ি ঘর, আত্মীয়-স্বজনদের নতুনভাবে চেনার ও জানার সুযোগ হবে এই বিদায়ের মাধ্যমে। তিনি তাঁর পরিবারকে অনেক বেশি সময় দিতে পারবেন যেটা আগে হয়তো কখনো সম্ভব হয়ে ওঠেনি। অবসরে নিজেকে হয়তো আরো নতুনভাবে আবিষ্কার করবেন।
তাই আপনার আগামী চলার পথ হোক সহস্র কোটি টুকটুকে লাল গোলাপের পাপড়ি বিছানো। শান্তি আর আর কর্মব্যস্ততায় ভরে থাক আপনার প্রতিটি ক্ষণ, আপনার দিন আপনার রাত।
শেষ করছি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা দিয়ে---
"যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়।"
সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
মো: ওমর ফারুক
সাটঁ মুদ্রাক্ষরিক কাম- কম্পিউটার অপারেটর
জাতীয় মহিলা সংস্থা, পাবনা জেলা কার্যালয়, পাবনা।